বায়ুদূষণে বছরে ক্ষতি ১৪০০ কোটি ডলার

বায়ুদূষণের কারণে বাংলাদেশে বছরে ১৪০০ কোটি ডলার বা সোয়া লাখ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। যা দেশের জিডিপির (মোট দেশজ উৎপাদন) প্রায় ৫ শতাংশ।

এছাড়া বায়ুদূষণে প্রতিদিন বিশ্বে ৮০০ কোটি ডলার ব্যয় হয় এবং বছরে ২.৯ ট্রিলিয়ন ডলার, যা সারাবিশ্বের মোট জিডিপির ৩.৩ শতাংশ।  

সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ার (সিআরইএ) ও গ্রিনপিস সাউথ ইস্ট এশিয়ার গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে বায়ুদূষণের কারণে সারাবিশ্বে ২.৯ ট্রিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে। বায়ুদূষণে সবচেয়ে বেশি ব্যয় বহন করে চীনের মূল ভূখণ্ড, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত। প্রতিবছর চীন ৯০ হাজার কোটি ডলার, যুক্তরাষ্ট্র ৬০ হাজার কোটি ডলার ও ভারত ১৫ হাজার কোটি ডলার খরচ করে।

৪৪ পাতার এই গবেষণা প্রতিবেদনে জীবাশ্ম জ্বালানির কারণে বায়ুদূষণ ও তাতে অকাল মৃত্যুর পরিসংখ্যান উঠে এসেছে।

এতে বলা হয়, বাতাসে জীবাশ্ম জ্বালানির ক্ষুদ্র কণার কারণে প্রতিবছর ৪৫ লাখ মানুষের অকাল মৃত্যু হয়। চীনে এ সংখ্যা ১৮ লাখ ও ভারতে প্রায় ১০ লাখ। ২০১৮ সালে বিশ্বে ৪০ লাখ শিশু তাদের পঞ্চম জন্মদিনের আগেই মারা গেছে। বছরে ৪০ লাখ মানুষ অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে আসছে চিকিৎসা নিতে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে বাংলাদেশে বায়ুদূষণজনিত রোগে ৯৬ হাজার শিশুর অকালমৃত্যু হয়েছে।

এর আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছিল, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে ৪২ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। বেশিরভাগই মারা যায় হৃদরোগ, স্ট্রোক, ফুসফুসের ক্যান্সার ও শিশুদের তীব্র শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে।

বায়ুদূষণের প্রভাবে অসুস্থতায় ২০১৮ সালে পুরো বিশ্বের মানুষ যত কর্মদিবস ছুটি কাটাতে বাধ্য হয়েছে, সব যোগ করলে সংখ্যাটা দাঁড়ায় ১৮০ কোটি দিন।

গ্রিনপ্রিস ইস্ট এশিয়ার সদস্য মিনউ সান বলেন, বায়ুদূষণের কারণে আমাদের স্বাস্থ্য ও অর্থনীতি দুইই হুমকির মুখে। এটি লাখো মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে, সেইসাথে এর জন্য হাজার কোটি ডলার খরচ হচ্ছে। তবে এই সংকটের সমাধানও আমরা জানি। রূপান্তরিত জ্বালানি, ডিজেল ও পেট্রলচালিত গাড়ির সংখ্যা কমানো ও গণপরিবহন বাড়ানোর কথা বলেন তিনি।

কয়লা ও পেট্রোলিয়ামের মতো জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের ফলে যে দূষণ ঘটছে মূলত তার ভিত্তিতেই এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ার ও গ্রিনপিস। নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড, ওজন ও ২.৫ পিএম (পার্টিকুলেট ম্যাটার) আকারের ভারী কণার দূষণের জন্য ক্ষতির মাত্রা হিসাব করা হয়েছে আলাদা করে।

আর ক্ষতি হিসাব করার ক্ষেত্রে অকালমৃত্যুজনিত ক্ষতি, চিকিৎসা ব্যয় ও কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিতির কারণে উৎপাদনে বিঘ্ন ঘটার মতো বিষয়গুলো বিবেচনায় নেয়া হয়েছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //